স্টাফ রিপোর্টার : সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেওয়ার বিষয়ে আদেশের জন্য ৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার এ দিন ধার্য করেন। অভিযোগপত্র আমলে নেওয়ার জন্য গতকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য ছিল। কিন্ত সরকারি চার কর্মকর্তাকে আসামি করার বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন না আসায় সময়ের আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনারুল কবীর বাবুল। শুনানি শেষে আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে এ দিন ধার্য করেন। এর আগে চলতি বছরের ৮ জুলাই ইমারত নির্মাণ আইনে দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র আমনে নিয়ে পলাতক সাত জনের
বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুর রহমান।
গত ১ জুন ঢাকার সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সংশ্লিষ্ট জিআর শাখায় সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর দুই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। হত্যা মামলায় ৪১ আসামির মধ্যে ২৪ জন পলাতক আছেন। ইমারত নির্মাণ আইনে করা মামলায় ১৮ জনের মধ্যে পলাতক আছেন সাতজন। তবে একই আসামি দুই মামলায় থাকায় মোট ৪২ আসামি ধরা হয়েছে।
দুই মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে খালেক কুলু, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, পৌরসভার সাবেক মেয়র রেফাত উল্লাহ, বর্তমান কমিশনার মোহাম্মদ আলী খানসহ ৫৯ জনকে আসামি করা হয়। তবে একই আসামি দুই মামলায় থাকায় মোট ৪২ জন ধরা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে ৪১ জন, আর সাক্ষী করা হয়েছে ৫৯৪ জনকে। ইমারত নির্মাণ আইনে করা মামলায় ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং সাক্ষী করা হয়েছে ১৩০ জনকে।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল সাভার থানায় আলাদা দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটি অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত করে পুলিশের হত্যা মামলা, অপরটি ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের ইমারত আইনে দায়ের করা মামলা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সাভার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ১,১৩৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে একটি অবহেলাজনিত হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন, আব্দুল খালেক ওরফে খালেক কুলু, কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী খান, পৌর মেয়র (বরখাস্ত) আলহাজ্ব মো: রেফাত উল্লাহ, আবুল হাসান, অনীল কুমার দাস, শাহ আলম মিঠু, এমায়েত হোসেন, রাকিবুল ইসলাম, আলম মিয়া, বজলুল সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান, আনিছুর রহমান, আমিনুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক খান, আলমগীর, রাসেল মধু ও সরোয়ার কামাল।
ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন ১৩ জনকে আসামি করে একই দিনে সাভার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সোহেল রানা, কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী খান, এমায়েত হোসেন, আবদুল খালেক, পৌর মেয়র (বরখাস্ত) আলহাজ্ব রেফাত উল্লাহ, বজলুল সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, রফিকুল ইসলাম ও সরোয়ার কামাল। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। এ সময় ভবনের নিচে চাপা পড়েন সাড়ে ৫ হাজার পোশাকশ্রমিক। এ ঘটনায় ১১৩৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ২৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।